ধ্যান বা মেডিটেশনের বেশ কিছু উপকারিতা আজকেই জেনেনিন
মেডিটেশন বা ধ্যান কথাটা শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে মুনিঋষিদের ছবি-যাঁরা পদ্মাসনের ভঙ্গিতে চোখ বন্ধ করে বসে আছেন। আসলে এই ধ্যান সম্পর্কে কতজনের ধারণা আছে?
ধ্যান হচ্ছে এমন একটি উপায়, যার মাধ্যমে মনকে প্রশিক্ষিত করা হয়। ধ্যানের মাধ্যমে নতুন এবং ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ তৈরি করা যায়। দেখা যায় আমাদের মন একসঙ্গে অনেক কিছু চিন্তা করতে থাকে। ধ্যানের মাধ্যমে একটি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়। যেমন হতে পারে নিশ্বাসের কিংবা শারীরিক সংবেদনের দিকে মনোযোগ দেওয়া। আবার হতে পারে একটি নির্দিষ্ট শব্দ বা শব্দগুচ্ছের প্রতি ধ্যান করা, যাকে বলা হচ্ছে 'মন্ত্র'।
Rupchada Super Chefধ্যানের ধরন বিভিন্ন ধরনের ধ্যান হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে 'মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন'। অনেকে সময় অতীতের ঘটনা আমরা বর্তমানে বয়ে নিয়ে বেড়াই। অতীতের কষ্ট বা ভুলগুলো বর্তমানকে প্রভাবিত করে। মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন বর্তমানের প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধন করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া আছে ইমাজিনারি, স্পিরিচুয়াল মুভমেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের ধ্যান।
যেভাবে করবেনএকদম নতুনদের জন্য প্রথমেই একটানা বেশিক্ষণ ধ্যান করা কঠিন। তাই প্রথমেই অ্যাডভান্স স্তরে না গিয়ে অল্প অল্প করে শুরু করা যেতে পারে। এর ফলাফল পেতে হলে ধারাবাহিক অভ্যাসের প্রয়োজন। অনেকে আছেন অল্প কয় দিন করে দ্বিধান্বিত থাকেন, আসলেই ঠিক হচ্ছে কি না। কিন্তু নিখুঁত ধ্যান (পারফেক্ট মেডিটেশন) বলতে কিছু নেই। একেকজনের অভিজ্ঞতা একেক রকম হতে পারে। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে ধারাবাহিকতা।
ধ্যানের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হতে পারে ভোরবেলা, যখন নিজের মন শান্ত থাকে। পাশাপাশি আশপাশের পরিবেশও থাকে শান্ত। এ ছাড়া নির্ভর করছে কোন ধরনের ধ্যান আপনি করবেন। সেটির ওপর নির্ভর করে আপনি দিনের যেকোনো সময় ধ্যানের অভ্যাস করতে পারেন।
অনেকের একটি ভুল ধারণা আছে। খুব চাপে আছে (স্ট্রেসফুল) কিংবা খুব রেগে আছেন, এমন সময়ে ধ্যান চর্চা করার চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু সেই সময়ে মনোযোগ ধরে রাখা কষ্টসাধ্য, যদি না আপনি ধ্যানে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করে না থাকেন। তাই শুরুতে শান্ত মনে এবং শান্ত পরিবেশে অভ্যাস শুরু করা দরকার। তবে ধ্যান কোনো প্রশিক্ষক বা গুরুর মাধ্যমে করতে পারলে দ্রুত এর ফল পাওয়া যেতে পারে।
নিশ্বাসের ধ্যানযাঁরা নতুনভাবে শুরু করতে চাচ্ছেন তাঁদের জন্যে ছোট একটা উদাহরণ হিসেবে নিশ্বাসের ধ্যানের কথা উল্লেখ করি। প্রথমে কয়েক মিনিট অভ্যাস করে তারপর ধাপে ধাপে সময় বাড়াতে পারেন।
একটি আরামদায়ক জায়গায় বসে চোখ বন্ধ করে শুধু নিজের নিশ্বাসের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। স্বাভাবিক নিশ্বাস নেওয়া ও ছাড়া এবং খেয়াল করা নিশ্বাস কোথা থেকে আসছে। এটা কি আপনার বুক নাকি গলা থেকে কিংবা আপনার নাক থেকে আসছে। এর মধ্যেই খেয়াল করবেন, আপনার মনোযোগ হয়তো অন্য কোথাও চলে যাচ্ছে। মনোযোগ অন্য কোথাও চলে গেলে ধীরে তা আবার নিশ্বাসের প্রতি নিয়ে আসুন। এ রকমভাবে আরও কিছুক্ষণ ধ্যান করার পর লম্বা একটা নিশ্বাস নিয়ে শরীরকে শিথিল করে চোখ খুলে ফেলবেন।
উপকারিতামেডিটেশনের বেশ কিছু উপকারিতা আছে-
মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে
নিজের প্রতি সচেতনতা বাড়ায়
হতাশা কমায়
মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ কমায়
এ ছাড়া আরও অনেক ধরনের উপকারিতা আছে। এই ফলাফলের জন্যে প্রয়োজন নির্দিষ্ট সময়ে অভ্যাস। এ ছাড়া নিজের প্রতি মনোযোগ, নিজেকে ভালোবাসা, জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব বাড়াতে সাহায্য করে ধ্যান বা মেডিটেশন।
তাই আজ থেকে আপনিও শুরু করতে পারেন ধ্যান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন