হিপনোটিজম করার ৪ টি উপায় | যেভাবে কাউকে সম্মোহিত করে বশীকরণ করে ফেলে
সত্যিই কি কাউকে হিপনোটাইজ করা সম্ভব?
হিপনোটিজম কিংবা সম্মোহন বিদ্যা বলে একটাব্যাপার আমরা অনেকেই শুনেছি। আপনাকেযখন কেউ সম্মোহিত করবে, আপনি তখন এমনএক জগতে চলে যাবেন যে আপনি শুধু তা-ইদেখবেন বা অনুভব করবেন যা আপনাকেদেখতে বলা হবে। অবচেতন মনে আপনিএতোটাই প্রভাবিত হবেন যে, আপনি সম্মোহিতহয়ে একটি নির্দিষ্ট আচরণ করতে বাধ্য হবেন।
হিপনোটিজম বেশ প্রাচীন বিদ্যা। প্রাচীন মানবসভ্যতার অনেকেই এই বিদ্যাটিকে ভাবতো যাদুবিদ্যা। কেউ হিপনোটিজম করলে মানুষ মনেকরতো তার অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে।
১৮৪০ সালে স্কটল্যান্ডের ড. জেমস ব্রেড এইবিদ্যার নাম দেন “হিপনোটিজম”।
১৮৪০ সালে স্কটল্যান্ডের ড. জেমস ব্রেড এইবিদ্যার নাম দেন “হিপনোটিজম”।
নামের পেছনে অবশ্য কার্যকরণ আছে।হিপনোটিজম শব্দটির উতপত্তি গ্রীক শব্দহিপনোস (Hypnos) থেকে। এই হিপনোস শব্দেরঅর্থ হচ্ছে, “ঘুম”। যেহেতু সম্মোহিত ব্যাক্তিঅনেকটা ঘুমের ঘোরেই হিপনোটাইজড হয়েকাজ করতে থাকেন, তাই এই বিদ্যাকেহিপনোটিজম নাম দেয়া হয়।
সম্মোহনের কয়েকটি পর্যায় আছে।
- মারণ
- ত্রাটন
- স্তম্ভন
- বশীকরণ
১. মারণ: মারণ হল অপছন্দের লোক কিংবাকোনো শত্রুকে সম্মোহিত করে নিকেশ করেফেলা।
২. ত্রাটন: ত্রাটন হল ত্রাণ। এর মানে হচ্ছে, সম্মোহন করে শত্রুর দুর্বলতার সুযোগ নেওয়া।সুযোগ নিয়ে তাকে বশীভূত করা।
৩. স্তম্ভন: স্তম্ভন মানে তোল্লাই দেওয়া বা বারখাওয়ানো। এই পদ্ধতিতে ঘোরতর অপরাধীকেসম্মোহন করে এমন অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় যে, সে অপরাধবোধ স্বীকার করে মহান হতে চায়।স্তম্ভনে ফেঁসে গিয়ে আসামী গড়গড় করে সবকিছু তদন্তকারী অফিসারকে বলে দেয়।
৪. বশীকরণ: নানা কৌশলে মানুষকে সম্মোহনেরমাধ্যমে নিজের বশে এনে বিভিন্ন নির্দেশ দেয়াইবশীকরণ।
চাইলেই অবশ্য কাউকে সম্মোহন করা যায় না।কাউকে হিপনোটাইজ করতে হলে তার সাহায্যলাগবে। মানে সেই ব্যক্তি যদি ইচ্ছে না করেনতাহলে হিপনোটাইজ করা সম্ভব হয় না।সাধারণত সম্মোহিত করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিকেপ্রথমে এক দৃষ্টিতে কোনো জিনিসের দিকে পূর্ণমনযোগ দিয়ে তাঁকে তাকিয়ে থাকতে বলা হয়।অনেকক্ষণ যাবত যখন লোকটা কোনো কিছুরদিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে তখনএমনিতেই
চোখ এবং মনও কিছুটা ক্লান্ত হয়ে যাবে। তখনতাকে বলা হবে চোখ বন্ধ করতে। চোখ বন্ধকরেই সম্মোহিত ব্যক্তি ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়বেঅনেকটা। যদি ঠিক ঠাক সম্মোহিত হয়ে থাকে, তাহলে এই পর্যায়ে হিপনোটাইজড ব্যক্তিকেসম্মোহনকারী ব্যাক্তি বিভিন্ন কথা বলবে, নির্দেশদিবে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলোহিপনোটাইজড ব্যক্তি এই নির্দেশগুলো পালনকরতে শুরু করবে!
আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে খুব সাধারণ ব্যাপার।
হিপনোটিজমের এতটাই প্রভাব যে, ধরে নিনএখন গ্রীষ্মকাল। কিন্তু, আপনি যাকেহিপনোটাইজ করলেন তাকে আপনি বুঝালেনএখন শীতকাল। সম্মোহিত ব্যাক্তি তখনহিপনোটাইজড থাকা অবস্থায় ঠক ঠক করেকাঁপা শুরু করবে, প্রবল শৈত্য প্রবাহে যেমন করেমানুষ কাঁপে ওমন। সম্মোহিত ব্যাক্তি ঐ নির্দিস্টসময়টায় নিজেকে কানা, খোঁড়া, অন্ধ, বাকশক্তিহীন সবকিছুই ভাবতে পারে। ধরেন, আপনারকোনো বন্ধু চরম পর্যায়ের বাঁচাল। কিন্তু, হিপনোটিজম করে আপনি তাকে বুঝালেন, তুমিবোবা, তুমি কথা বলতে পারবে না। মজার ব্যাপারহচ্ছে, ঐ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সে সত্যিই বিশ্বাসকরবে সে বোবা, এবং কথা বলতে পারবে না! এবং সম্মোহন ভেঙ্গে যাওয়ার পর সেই ব্যক্তি ওইনির্দিষ্ট সময়ে কী কী ঘটেছে এবং সে কী কীকরেছে, তার কিছুই মনে রাখতে পারে না!
ইংল্যান্ডে একজন দাঁতের ডাক্তার ছিলেন। তারনাম ডা. এস ডেল। তিনি অবশ করার কৌশলব্যবহার না করে রোগীকে হিপনোটাইজ করে দাঁততুলে নিতেন। দাঁত উঠানোর সফলতা কাজেলাগিয়ে হিপনোটিজম ব্যবহার করে তিনি এরপরফুসফুসের অস্ত্রোপচারও করেন! জটিলঅপারেশনের সময় রোগীর মনে যে চাপ পড়ে,দুশ্চিন্তার তৈরি হয় সেসব দূর করা সম্ভবহিপনোটিজম করে।
এতো ভালো দিক বললাম। হিপনোটিজমেরঅপব্যবহারেরও উদাহরণ আছে অজস্র। ১৯৭০দশকের কথা। আমেরিকায় থাকতেন একভারতীয় গুরু। তার শিষ্য সংখ্যা বেশ ভালোই।একদিন তার কি মতি হলো কে জানে! তিনি তারশিষ্যদেরকে হিপনোটাইজড করে নির্দেশ দিলেন, বিষ পান করতে। একটা বড় ড্রামে তরল বিষভর্তি ছিলো। শিষ্যরা সম্মোহিত অবস্থায় গুরুরকথা শুনে এক গ্লাস করে বিষ পান করলো। এইঘটনায় এক সাথে প্রায় ৭০ জন মানুষ মারা যায়! আমেরিকান সরকার তখনকার এইগণআত্মহত্যায় আতংকিত হয়ে এই ধরণেরগুরুকেন্দ্রিক আশ্রম গড়ে তোলার উপরনিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো।
আমেরিকা ও ব্রিটেনের বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীএকদল মানুষের ওপর হিপনোটিজমের প্রভাবকতখানি কার্যকর হয় সেটি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষাচালিয়েছেন।তারা দেখতে চেয়েছেন যে, হিপনোটাইজ করে একজন নিরেট ভদ্র ভালোমানুষকে খুনি বানানো সম্ভব কি না! গবেষণারফল কি হয়েছে জানেন? গবেষণার ফল হয়েছেযে, একজন সাধারণ মানুষকে হিপনোটাইজ করেসত্যি সত্যি তাকে দিয়ে মানুষ খুন করানো সম্ভব! হিপনোটাইজ হয়ে সে একজন মানুষকেঅবলীলায় খুন করে আসবে এবং মজার ব্যাপারহচ্ছে সম্মোহন ভেঙ্গে গেলে এই খুনের কোনোকথাই তার মনে থাকবে না! যে কোন .সমসায় কল করুন .01757786808/
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন